বিশেষ প্রতিনিধি (নারায়ণগঞ্জ):-
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চবটি এলাকার আরাফাত নগরের বাসিন্দা মোসা. সোনালী আক্তার (২০), পিতা: সোহরাব উদ্দিন, ২০২৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে করেন ইটালি প্রবাসী রেজওয়ান রাফি চৌধুরীর সঙ্গে। উভয় পরিবারের সম্মতিতেই এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ের পর থেকেই সোনালীর আচরণে স্বামীর পরিবার অস্বস্তি বোধ করতে থাকে বলে অভিযোগ ওঠে। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, বিয়ের কিছুদিন পর সোনালী বিভিন্ন অজুহাতে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করতেন এবং পারিবারিক দায়িত্ব ও সম্পর্কের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েন। স্বামীর পরিবারের আরও অভিযোগ, সোনালীর আচরণে তারা পরকীয়ার প্রমাণ পায় এবং তাকে তা থেকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করে। তবে তিনি তাতে কর্ণপাত না করে বাবার বাড়িতে চলে যান।
পরবর্তীতে সোনালী আক্তার নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি যৌতুক মামলা (মামলা নং ৭৭৩/২০২৫) দায়ের করেন স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ী এবং ননদের বিরুদ্ধে। মামলার প্রেক্ষিতে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে, রাফি ও তার পরিবারের সদস্যরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন লাভ করেন।
সোনালীর পক্ষ থেকে পরে একটি সমঝোতার প্রস্তাব আসে, যেখানে মামলার নিষ্পত্তির জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয় বলে দাবি করেন রাফির পরিবার। দুই পক্ষের উপস্থিতিতে কোর্টের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয় এবং পাঁচ কিস্তিতে মোট পাঁচ লাখ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে দুই কিস্তি পরিশোধও করা হয়।
তবে তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার আগেই, ২৭ জুলাই ২০২৫ দুপুরে সোনালীর আত্মীয়-পরিজন ও সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে গিয়ে হুমকি, ভয়ভীতি ও অপ্রীতিকর আচরণ করার অভিযোগ ওঠে। রাফির পরিবার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ফতুল্লা থানায় অবগত করে এবং দুইটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগে সোনালীর পাশাপাশি আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়, যাদের মধ্যে রয়েছেন: শাহ্ আলম, আনোয়ার হোসেন, আরিয়ান আহমেদ, ফারহানা বেগম ও শারমিন।
বর্তমানে বিষয়টি পুলিশের তদন্তাধীন। এদিকে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরছে, ফলে পুরো ঘটনাটি এখন একটি জটিল আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।