ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া বাজার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত টানা সংঘর্ষে অন্তত ২০টি গ্রামের হাজারো মানুষ অংশ নেয়। এতে উভয় পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। আহতদের মধ্যে প্রায় ৫০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ২০টি বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ওমর ফারুক অভিযোগ করেন, তার ৫টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে সংঘর্ষকারীরা।
স্থানীয়রা জানান, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গট্টি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জাহিদ মাতুব্বর ও নুরু মাতুব্বরের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে। দুজনই বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকারের পতনের পর তারা দুজনই বিএনপিতে যোগ দেন এবং ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা চালান।
সম্প্রতি এই বিরোধের জের ধরে বেশ কয়েক দফা সংঘর্ষ ঘটে। আজকের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের হাজারো সমর্থক ঢাল, কাতরা, ভেলা, টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে বালিয়া বাজার, কাঠিয়ার গট্টি, বালিয়া গট্টি, আড়ুয়াকান্দী, ঝুনাখালি, মেম্বার গট্টি, ভাবুকদিয়া, সিংহপ্রতাব, কানুইর, দিয়াপাড়া, জয়ঝাপ, আগুলদিয়া, মোড়হাটসহ প্রায় ২০টি গ্রাম জুড়ে। পুরো এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, নারী ও শিশুকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটোছুটি করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) কেএম মারুফ হাসান রাসেল জানান, সকাল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। দীর্ঘ চেষ্টা চালিয়ে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তিনি আরও বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
উভয় পক্ষের নেতা জাহিদ মাতুব্বর ও নুরু মাতুব্বরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা সাড়া দেননি।
🔴 এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে।