নেপালে চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও চীন জানিয়েছিল, তারা পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছে। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দেশটির সঙ্গে দুই দেশেরই কৌশলগত স্বার্থ জড়িত।
দীর্ঘদিন নেপালে ক্ষমতায় ছিল কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি। তবে গত সপ্তাহে তাঁর পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সে অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে এবং পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়। এর পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন সুশীলা কারকি। অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের মতো তাঁকেও অভিনন্দন জানিয়েছে চীন।
চীনা বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার পরিবর্তন হলেও নেপাল-চীন সম্পর্কে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। সোমবার সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপাল বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অংশীদার হওয়ায় চীনের স্বার্থ এখানে সুদৃঢ়। ফলে নতুন সরকারের সঙ্গেও চীন যোগাযোগ রক্ষা করেছে।
ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক লি মিন ওয়াং বলেন, নেপালে যখনই নতুন সরকার এসেছে, চীন সবার আগে শুভেচ্ছা জানিয়েছে—এটি এখন তাদের কূটনৈতিক প্রথা। তবে তিনি মনে করেন, অস্থিতিশীল রাজনীতির কারণে নেপালের অর্থনীতি দুর্বল এবং এর প্রভাব বিআরআই প্রকল্পগুলোর ওপরও পড়েছে। তবুও সাধারণভাবে নেপাল চীনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে, তাই সরকার পরিবর্তনে দুই দেশের সম্পর্কে বড় কোনো পরিবর্তন ঘটে না।
২০১৭ সালে নেপাল বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার পর থেকে সড়ক, জলবিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক বিনিয়োগ করে আসছে চীন। তবে কাঠমান্ডু-তিব্বত রেলপথসহ বেশিরভাগ প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই ধীর।
সাংহাই ইনস্টিটিউটস ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের দক্ষিণ এশিয়া গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক লিউ জংই বলেন, “নেপালে যে-ই নেতৃত্বে আসুক, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিআরআই প্রকল্প বাস্তবায়ন কঠিন।”
পদত্যাগের মাত্র কয়েক দিন আগে অলি চীন সফরে গিয়ে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু দেশে ফেরার পর বিক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে। দুই দিনের সহিংসতায় অন্তত ৭২ জন নিহত হওয়ার পর শেষ পর্যন্ত তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হতে হয়।