জলবায়ু সংকট দৈত্যরূপে এগিয়ে আসছে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৫ জুন ২০২৫ ০৫:০৭ অপরাহ্ণ   |   ১০৯ বার পঠিত
জলবায়ু সংকট দৈত্যরূপে এগিয়ে আসছে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-

 

বিশ্ব ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে এবং এই সর্বনাশের জন্য দায়ী আমরা সবাই—এমনটাই মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
 

বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস এবং পরিবেশ ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন,
 

“এই পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য আমরা সবাই আসামি। আমাদের প্রত্যেকের অংশগ্রহণেই এই ধ্বংসযজ্ঞ।”


ড. ইউনূস বলেন,

“আমাদের পূর্বপুরুষেরা বলেছিলেন—সাগরের সব পানি যদি কালি হয়, আর বনের সব গাছ যদি কলম হয়, তবুও এই অপরাধের বিবরণ শেষ করা যাবে না। ঠিক সেই অপরাধই আমরা প্রতিদিন করে চলেছি—নির্বিচারে প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি।”

তিনি আরও বলেন, আধুনিক বিশ্ব বহু সংকটে জর্জরিত—যুদ্ধ, প্রযুক্তির অপব্যবহার, অস্থিরতা; তবে সবচেয়ে ভয়াবহ যে সংকটটি আমাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে, সেটি হলো জলবায়ু সংকট।

“এটি প্রকৃতির অপরাধ নয়, এটি মানুষের—আমাদেরই অপরাধ। আমরা যারা প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানের কথা বলি, তারাই প্রকৃতির শত্রুতে পরিণত হয়েছি। এই ধ্বংসের দায় প্রকৃতির নয়, বরং এক বিধ্বংসী প্রাণীর, যার নাম মানুষ।”

বিশ্বের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা জলবায়ু সংকটকে তিনি ‘দৈত্য’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন,

“এই দৈত্য আমাদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে—তোমরা থাকবে না আমি থাকবো, একসাথে সহাবস্থান সম্ভব নয়।”

প্লাস্টিক দূষণের প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন,

“প্লাস্টিক তিনটি বড় সংকট তৈরি করেছে—জলবায়ু পরিবর্তন, প্রকৃতি ধ্বংস এবং জীববৈচিত্র্য বিপর্যয়। এটি এমন এক বস্তু যার জন্ম আছে, মৃত্যু নেই। আজ আমরা দিবস পালন করব, সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে প্লাস্টিকের ব্যাগেই বাজার আনব। এভাবেই চলতে থাকলে মানুষের পরাজয় অনিবার্য।”

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,

“পৃথিবীর নদী-নালা, জলাশয়—সবই প্লাস্টিকে ভরে গেছে। সামুদ্রিক প্রাণীরা হারিয়ে যাচ্ছে, মাটি বিষাক্ত হয়ে পড়ছে। অথচ আমরা শুধু আয়োজন করি, বক্তৃতা দিই, ঘরে ফিরে গিয়ে আবার আগের মতোই জীবনযাপন করি।”

এ থেকে উত্তরণ সম্ভব কি না, সে প্রশ্ন রেখে ড. ইউনূস বলেন,

“যদি আমাদের জীবনধারা বদলানো না যায়, তবে এই যুদ্ধে মানুষ পরাজিত হবে—এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এখনই আমাদের ভাবতে হবে—এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার পথ কী হতে পারে।”